তিস্তার বুকজুড়ে এখন শুধু বালুচর, হুমকির মুখে হাজারো কৃষক
তিস্তার বুক দুরদুরান্ত পর্যন্ত এখন শুধুই প্রানহীন ধুধু বালুচর। যদিও এক সময়ের স্রোতস্বিনী তিস্তা দিনে দিনে নাব্যতা হারানোর কারণে হুমকির মুখে পড়েছে হাজারো কৃষক এবং বন্ধ হয়ে যাচ্ছে সেখানকার চাষাবাদ।
তিস্তা ব্যারেজ থেকে শুরু করে বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে খুব সামান্য পানি থাকায় অনেকটাই মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছে এ অঞ্চলের কৃষকরা কেননা পানি পর্যাপ্ত পরিমান না হলে চাষাবাদ হবেনা । সেই সঙ্গে একেবারে কর্মহীন হয়ে পড়েছে স্থানীয় চর এলাকার হাজারো খেটে খাওয়া দরিদ্র মানুষ।
এই তিস্তা নদীকে কেন্দ্র করে বৃহত্তর রংপুর দিনাজপুর ও বগুড়া জেলার সকল অনাবাদী জমি একসময় সেচের আওতায় আনতে নেয়া হয়েছিল তিস্তা ব্যারেজ সেচ প্রকল্প। এই প্রকল্প থেকে সুফলও মিলতে শুরু করেছিলো। তিস্তার পানি ব্যবহার করে সেখানে ধান, গম, ভুট্টা, সরিষাসহ বিভিন্ন মৌসুমি ফসল ঘরে তোলার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছিল চাষিদের।
কিন্তু সেই তিস্তায় বর্তমানে পানি নেই। শুকিয়ে কাঠ গেছে। বর্তমানে পানি নেমে এসেছে সাড়ে চারশো থেকে পাঁচশো কিউসেক এ। পর্যাপ্ত পানি না থাকার ফলে তিস্তায় এখন দিক দিগন্ত শুধুই ধুধু বালু চর। পানির অভাবে চাষাবাদ বন্ধ হয়ে আছে কৃষকদের।
স্থানীয় কৃষকরা জানান, তিস্তা নদী শুকিয়ে এখন পানি শূন্য। আমরা পানির অভাবে কষ্টে আছি। পানি আমাদের কৃষি কাজের জন্য প্রধান হাতিয়ার।
পানির অভাবে লালমনিরহাটের তিস্তা নদী তীরবর্তী এলাকার রাজপুর, খুনিয়া গাছ, গোবর্ধন, মহিষখোচাঁ, কালমাটি, চরবৈরাতি, ভোটমারী, সানিয়াজান, সিন্দুর্না, ডালিয়াসহ ৬৭-৬৮ টি চরাঞ্চলের দশ হাজার হেক্টর জমিতে ব্যাহত হচ্ছে চাষাবাদ।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এর উপ-পরিচালক শামীম আশরাফ বলেন, পানির স্তর কিছুটা নেমে যায়। সে কারণে পানির সেচ দেয়াটা কঠিন হয়ে পড়ে।
একটা বড় গর্ত তৈরি করার পর সেখান থেকে যে পানি টুকু আসবে আশাকরি তা দিয়ে কাজ চালানো যাবে। তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি বাস্তবায়ন হলে ও নদী খনন করে চাষাবাদের সুযোগ সৃষ্টি হলে দুঃখ দুর্দশা লাঘব হবার সম্ভাবনা তৈরী হবে এমনটাই প্রত্যাশা তিস্তা নদী পাড়ের হাজার হাজার খেঁটে খাওয়া মানুষের।
জিএম/এসএস