28 C
ঢাকা, বাংলাদেশ
সকাল ৮:৩০ | ২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ খ্রিস্টাব্দ | ৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ বঙ্গাব্দ
গ্রীন পেইজ
প্রাণী বৈচিত্র্য

জাতীয় চিড়িয়াখানায় ৫০ নতুন প্রাণ

মিরপুরে বাংলাদেশ জাতীয় চিড়িয়াখানায় ১৯৮৪ সাল থেকে চাকরি করছেন আবদুর রহমান। নিরাপত্তাকর্মী হিসেবে কাটিয়ে দিয়েছেন ৩৬টি বছর। আর মাত্র বছর দুয়েক পর অবসরে যাবেন। কিন্তু তিন যুগ পর এসে যেন ঠিক আগের চিড়িয়াখানা দেখতে পাচ্ছেন আবদুর রহমান। সবুজ গাছগাছালিতে ঘেরা, পাখিদের কলকাকলিতে মুখর, পশুপাখিদের বিচিত্র সব হাঁকডাক। দেশে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে চিড়িয়াখানায় চার মাস ধরে দর্শনার্থী প্রবেশ নিষিদ্ধ। জনমানবশূন্য হওয়ায় চিড়িয়াখানার প্রাণীরা যেন উৎসবে মেতেছে। এরই মধ্যে জন্ম নিয়েছে অর্ধশত প্রাণী।

গতকাল বুধবার চিড়িয়াখানার প্রবেশ ফটকে কথা হয় আবদুর রহমানের সঙ্গে। বললেন, ‘আমি কোনো দিন চিড়িয়াখানা বন্ধ থাকতে দেখিনি। ঈদের দিন হলেও লাখ লাখ মানুষ আসে। এবার কিছুই নাই। মানুষের ভিড় দেখলে প্রাণীরা খাঁচায় এক কোণে বসে থাকত। সামনে আসত না। এখন ওরা সাহসী হইছে। খাঁচার সামনে শুইয়া-বইসা থাকে।’

এ কথা বলেই আবদুর রহমান চিড়িয়াখানার মূল ফটকের বাঁ পাশে চিত্রা হরিণের বেষ্টনী দেখিয়ে দিলেন। তাঁর কথামতো বেষ্টনীর দিকে তাকাতেই দেখা গেল, শতাধিক হরিণ বেষ্টনীর সামনে জড়ো হয়ে আছে। অচেনা লোক দেখেও সরে যায় না। খানিক তাকিয়ে থেকে আবার মাটিতে ছড়িয়ে–ছিটিয়ে থাকা ঘাস–লতাপাতা মুখে নিয়ে চিবোতে থাকে হরিণের পাল। বৃষ্টির কারণে হরিণের পুরো শরীর চকচক করছে। হরিণগুলোর গায়ে গাঢ় বাদামি রঙের ওপর সাদা সাদা ফোঁটা। একবার তাকালে চোখ ফেরানো যায় না।

লোকজনের আনাগোনা না থাকায় অন্য প্রাণীরাও খাঁচায় মহানন্দে আছে। বানরগুলো দোলনায় দুলছে তো দুলছেই। আয়েশি মেজাজে গর্জন করছে বাঘ। প্রায় একই দৃশ্য দেখা গেল সিংহ, উল্লুক, জিরাফ, জেব্রা, চিতা বাঘের খাঁচায়ও। চিড়িয়াখানায় প্রাণী, পাখপাখালিদের ঘরে গত কয়েক মাসে এসেছে নতুন অতিথি। ইমু পাখির নতুন নয়টি বাচ্চা জন্ম নিয়েছে জুনের শেষ দিকে। সব মিলিয়ে চিড়িয়াখানায় এখন ৩০টি ইমু পাখি আছে। নতুন পাখিদের বেশ চোখে চোখে রাখে মা ইমুরা।

ময়ূরদের সংসারেও এসেছে নতুন অতিথি। ২০টি ময়ূর জন্ম নিয়েছে। চিড়িয়াখানায় ১৯টি অস্ট্রিচ ছিল। গত চার মাসে ওরা ডিম পাড়া শুরু করেছে। নয়টি ডিম ইনকিউবেটরে রাখা হয়েছে। চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষের আশা, এসব ডিম থেকে নতুন করে অস্ট্রিচের বাচ্চা পাওয়া যাবে। এ ছাড়া ওয়াইল্ড বিস্ট, গাধা, জিরাফের ঘরেও এসেছে একটি করে নতুন অতিথি। সবচেয়ে বেশি নতুন অতিথি এসেছে হরিণদের সংসারে। মার্চ থেকে চলতি জুলাই পর্যন্ত ১২টি হরিণ জন্মেছে। বর্তমানে চিড়িয়াখানায় হরিণ রয়েছে তিন শতাধিক।

গতকাল চিড়িয়াখানার কিউরেটর নূরুল ইসলাম বলেন, মার্চ থেকে এ পর্যন্ত অর্ধশত নতুন প্রাণীর জন্ম হয়েছে চিড়িয়াখানায়। কারণ, প্রাণীরা দর্শনার্থী বেশি দেখলে আতঙ্কে থাকে। খাবার ঠিকমতো খেতে চায় না। উচ্ছিষ্ট খাবার রয়ে যেত। এখন সব খাবার খেয়ে নিচ্ছে। মেজাজ–মর্জি ভালো থাকায় প্রজননও হচ্ছে।

করোনার কারণে আপাতত চিড়িয়াখানা দর্শনার্থীদের জন্য খুলে দেওয়া হবে না। এ কথা জানিয়ে কিউরেটর নূরুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে চিড়িয়াখানার যে পরিবেশ রয়েছে, দর্শনার্থীরা আবার এলেও যেন এই পরিবেশ বজায় থাকে, সেই পরিকল্পনা করা হচ্ছে। খাঁচা থেকে নির্দিষ্ট দূরত্বে যেন দর্শনার্থীরা দাঁড়িয়ে প্রাণীদের দেখতে পারেন, সেই ব্যবস্থা করার চিন্তা রয়েছে। তবে খুব শিগগির চিড়িয়াখানা দর্শকদের জন্য খুলে দেওয়ার চিন্তা নেই বলে জানালেন নূরুল ইসলাম। সূত্র: প্রথম আলো

“Green Page” কে সহযোগিতার আহ্বান

সম্পর্কিত পোস্ট

Green Page | Only One Environment News Portal in Bangladesh
Bangladeshi News, International News, Environmental News, Bangla News, Latest News, Special News, Sports News, All Bangladesh Local News and Every Situation of the world are available in this Bangla News Website.

এই ওয়েবসাইটটি আপনার অভিজ্ঞতা উন্নত করতে কুকি ব্যবহার করে। আমরা ধরে নিচ্ছি যে আপনি এটির সাথে ঠিক আছেন, তবে আপনি ইচ্ছা করলেই স্কিপ করতে পারেন। গ্রহন বিস্তারিত