ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তা নতুন বছরকে স্বাগত জানিয়েছে একটি নতুন রেকর্ড দিয়ে। কয়েক দশকের তুলনায় এবারই সেখানে সবথেকে বেশি ভারী বর্ষণ হয়েছে। এর ফলে শহরটি প্রায় ৫ মিটার পানির নিচে ডুবে গিয়েছিলো। সৃষ্টি হয়েছিলো ভূমিধসের। গত সপ্তাহে পানি নেমে যেতে শুরু করে। কিন্তু এই বন্যার ফলে শহরটিতে প্রাণ হারান কমপক্ষে ৬০ জন। এছাড়া ধ্বংস হয়ে গেছে অনেক অবকাঠামো। হাজার হাজার মানুষকে ছাড়তে হয়েছে বাড়ি।
পৃথিবীর সমুদ্র তীরবর্তী শহরগুলো ডুবে যাচ্ছে।
তবে সবার থেকে দ্রুত ডুবছে জাকার্তা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ২০৫০ সালের মধ্যে অর্থাৎ আর ৩০ বছরের মধ্যেই উত্তর জাকার্তার পুরোটাই পানির নিচে চলে যাবে। এখনই সেখানে বৃষ্টি হলেই সিলিভুং নদীর পানি উপচে জরাজীর্ণ শহরটিকে ভাসিয়ে দেয়। খালগুলি দ্রুত ভরে যায়। ঘরবাড়ি এবং রাস্তাঘাট ডুবে যায়। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সবথেকে বড় শহরটির ভবিষ্যৎ এভাবেই ঘনিয়ে আসছে। এর পেছনে সবথেকে বেশি দায়ী জলবায়ু পরিবর্তন। বিশ্বজুড়ে অব্যাহতভাবে তাপমাত্রা বাড়ছে। ফলে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সামনের বছরগুলোতে প্রবল বৃষ্টিপাত আরো ক্ষতিসাধন করবে।
ইন্দোনেশিয়া আশেপাশের অন্যান্য দেশের তুলনায় অধিক গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গত করে। এর পেছনে অন্যতম কারণ দেশটির কৃষিকাজ ও এর পরিচালনা পদ্ধতি। ইন্দোনেশিয়ান কৃষকরা পাম তেল এবং অন্যান্য বৃক্ষরোপণের জন্য বনে আগুন ধরিয়ে দেয়। এই প্রক্রিয়ায় প্রচুর পরিমাণে কার্বন ডাই অক্সাইড ছড়ায় বাতাসে। দেশটি বিদ্যুত উৎপাদনের নতুন নতুন বিস্তৃত কর্মসূচিও হাতে নিচ্ছে। যার জন্য অনেক নতুন কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করা হচ্ছে। এটিও পরিবেশ ধ্বংস করছে। পরিবেশবিদরা বলছেন, অবস্থার উন্নতি চাইলে সরকারকে দ্রুত জাকার্তার চারদিকে বনগুলোতে বৃক্ষ রোপন করতে হবে। তাহলে এটি বৃষ্টিপাতের কিছুটা শোষণে সহায়তা করবে।