বাইডেন ভার্চুয়াল জলবায়ু শীর্ষক শীর্ষ সম্মেলনে ৪০ বিশ্ব নেতাদের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন – হোয়াইট হাউজ

যুক্তরাষ্ট্র আগামী ২২ ও ২৩ শে এপ্রিল, ২০২১ তারিখে ২ দিন ব্যাপি জলবায়ু সম্পর্কিত একটি ভার্চুয়াল লিডারস শীর্ষ সম্মেলনের আয়োজন করতে যাছচ্ছ। উক্ত শীর্ষ সম্মেলনে প্রেসিডেন্ট বাইডেন বাংলাদেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ বিশ্বের ৪০ জন বিশ্ব নেতাকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।

সম্মেলনটি জনগণের দেখার জন্য সরাসরি প্রচারিত হবে।গত ২৬ মার্চ প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এ আমন্ত্রণ জানান, হোয়াইট হাউজ প্রেস ষ্টেমেন্ট।

বাইডেন ২৭ শে জানুয়ারী,২০২১ তারিখে যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতা গ্রহনের প্রথম দিনই প্যারিস চুক্তিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে ফিরিয়ে আনার জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। পরের দিন জলবায়ু সংকট মোকাবেলায় বিশ্বের প্রধান অর্থনৈতিক খাত সংশ্লিষ্ট উদ্যোগগুলো পুনরূদ্ধার প্রচেষ্টার জন্য তিনি শীঘ্রই একটি শীর্ষ সম্মেলন আহ্বান করবেন বলে ঘোষণা করেন।

আশা করা যাচ্ছে যে, জলবায়ু সম্পর্কিত উক্ত ভার্চুয়াল সম্মেলনে বিশ্ব নেতৃবৃন্দ জোরালোভাবে জলবায়ু কর্মের জরুরি প্রয়োজনীয়তা-এবং অর্থনৈতিক সুবিধাগুলোকে গুরুত্ব দেবে।

আগামী নভেম্বর, ২০২১ তে স্কটল্যান্ডের বন্দর নগরী গ্লাসগোতে অনুষ্টিতব্য জাতিসংঘের জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক সম্মেলন (UN Climate Change Conference (UNFCCC COP 26)এর পথে এটি একটি মূল মাইলফলক হিসাবে স্বাক্ষর রাখবে।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে,বিজ্ঞানীরা জলবায়ু পরিবর্তনের সবচেয়ে খারাপ প্রভাব হতে পরিত্রানের উপায় হিসাবে প্যারিস চুক্তি মোতাবেক ১৭৫০ সালে অর্থাৎ শিল্প বিপ্লবের পূর্ব সময় হতে পৃথিবীর তাপমাত্রা বৃদ্ধি বর্তমান শতাব্দিতে ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে সীমাবদ্ধ রাখার প্রয়োজনীয়তার উপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন।

এ সম্মেলন এবং COP26 উভয়ে বিশ্ব নেতৃবৃন্দের মূল লক্ষ্য হবে পৃথিবীর তাপমাত্রা ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বৃদ্ধি সীমাবদ্ধ রাখার প্রচেষ্টার অনুঘটক হিসাবে কাজ করা।

সম্মেলনটিতে প্যারিস চুক্তি মোতাবেক জলবায়ু উচ্চাকাঙ্ক্ষা অর্জণে কিভাবে ভাল বেতনের চাকুরী তৈরি করবে,উদ্ভাবনী প্রযুক্তি উন্নত করবে এবং দুর্বল দেশগুলোকে জলবায়ুর প্রভাবের সাথে খাপ খাইয়ে নিতে সহায়তা করবে, তার উদাহরণও তুলে ধরবে।

শীর্ষ সম্মেলনের সময় নাগাদ আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র প্যারিস চুক্তির অধীনে নির্ধারিত লক্ষ্য অর্জণে ২০৩০ সালের মধ্যে কার্বণ নির্গমনে তার দেশের অবদান হিসাবে একটি উচ্চাকাঙ্ক্ষী লক্ষ্য ঘোষণা করবে।

বাইডেন সম্মেলনে তার আমন্ত্রণে অংশগ্রহণ করা বিশ্ব নেতৃবৃন্দকে শীর্ষ সম্মেলনে তাদের দেশগুলো কিভাবে প্যারিস চুক্তির আলোকে কার্বণ নির্গমণ সীমিত করার মাধ্যমে শক্তিশালী জলবায়ু আকাঙ্ক্ষায অর্জণে ভূমিকা রাখবে তা রূপরেখা ঘোষণার জন্য আহ্বান জানাবেন।

শীর্ষ সম্মেলনটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন বিশ্বের ৮০% জিডিপি অর্জণকারী এবং ৮০% কার্বণ নির্গমণের জন্য দায়ী ১৭ টি উন্নত দেশের অর্থনৈতিক জোটভূক্ত সদস্য রাষ্ট্রসমূহকে শক্তি উৎপাদন ও জলবায়ু পরিবর্তণ রোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহনে পূন:আহ্বান জানানো হবে।

জো বাইডেন অন্যান্য দেশের প্রধানদেরও আমন্ত্রণ জানিয়েছেন যারা জলবায়ু নেতৃত্বের শক্তিশালী নেতৃত্ব প্রদর্শন করছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বিশেষত ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে, এবং যারা ইতোমধ্যে গড়-শূণ্য (net-zero )কার্বণ নির্গমণ অর্থনীতিতে অভিনব পথ অবলম্বন করছেন। স্বল্প সংখ্যক ব্যবসায়ী ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরাও এই সম্মেলনে অংশ নেবেন।

গড়-শূণ্য (net-zero)কার্বণ নির্গমণ বলতে কোন দেশের বায়ুমন্ডলে কার্বণ নির্গমণ ও বায়ুমন্ডল হতে কার্বণ অপসারণ (প্রাকিৃতক ভাবে বনায়নের দ্বারা, জীবাস্ম জ্বালাণী যেমন, পেট্টোল, ডিজেল, কয়লা ব্যবহার করে বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিবর্তে সবুজ শক্তি উৎপাদন করা, প্রযুক্তি উন্নয়নের মাধ্যমে কার্বন নির্গমন হ্রাস করা ইত্যাদি) করার মাধ্যমে কার্বণ উৎপাদন ও অপসারণে সমতা আনয়ন করাকে বুঝায়।

২০১৫ সালে স্বাক্ষরিত প্যারিস চুক্তি অনুযায়ী একবিংশ শতাব্দিতে পিৃথিবীর উষ্ণতা ১৭৫০ সালের উষ্ণতা হতে ১.৫ ডিগ্রী সেলসিয়াসে সীমাবদ্ধ রাখা এবং কিছুতেই ২ ডিগ্রী সেলসিযাসের উর্ধে উঠতে না দেওয়ার জন্য ২০৫০ সালে বিশ্বের প্রধান প্রধান কার্বণ নির্গমণকারী দেশসমূহকে গড়-শূণ্য (net-zero) কার্বণ নির্গমণ অর্থনীতিতে পৌঁছাতে হবে।

শীর্ষ সম্মেলনের মূল বিষয়গুলোর (Key themes ) মধ্যে রয়েছে:

• • বিশ্বের প্রধান প্রধান অর্থনীতির দেশগুলোকে চলমান শতাব্দিতে পৃথিবীর তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নাগালের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখতে বর্তমান সংকটপূর্ণ দশকে কার্বণ নির্গমনের পরিমাণ হ্রাস করার প্রচেষ্টা গ্রহনের বিষয়টিকে দৃঢ় করা।
  • কার্বণ নির্গমনে গড়- শূণ্যতা (net-zero) অর্জণে প্রচেষ্টা গ্রহনের জন্য এবং দুর্বল দেশগুণলাকে জলবায়ুর প্রভাব মোকাবেলায় সহায়তা করার জন্য সরকারী ও বেসরকারী খাতের অর্থ সংগ্রহ করা।
  • একটি নতুন পরিষ্কার জ্বালানী অর্থনীতিতে রূপান্তরের মাধ্যমে বিশ্বের সকল সম্প্রদায় এবং শ্রমিকদের জলবায়ু কর্মের অর্থনৈতিক সুবিধাগুলো প্রাপ্তি, নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে উপকৃত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করার উপর জোর দেওয়ার উপর গুরুত্ব আরোপ করা।

• কার্বণ নির্গমন হ্রাস করতে এবং জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে খাপ খাইয়ে নিতে সহায়তা করে, পাশাপাশি প্রচুর নতুন অর্থনৈতিক সুযোগ তৈরি করে এবং ভবিষ্যতের শিল্পগুলোকে কার্বণ নির্গমণমুক্ত গড়ে তুলতে সাহায্য করবে – এমন উদ্ভাবনী প্রযুক্তিতে পরিবর্তনে উৎসাহ যোগানো।
• সবুজ পুনরুদ্ধার এবং বিশ্বের তাপমাত্রা ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখার জন্য একটি ন্যায়সঙ্গত দৃষ্টিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং উচ্চাকাঙ্ক্ষা ও স্থিতিশীলতার দিকে এগিয়ে যাওয়ার জন্য জাতীয় সরকারগুলোর সাথে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করা – এমন আঞ্চলিক এবং অ-রাষ্ট্রীয় বিশ্ব নায়কদেরকে বিশ্বসম্প্রাদায়ের সাথে পরিচিত করা, সন্মান জানানো।
• জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব হতে জীবন ও জীবিকা নির্বাহের সক্ষমতা জোরদার করার সুযোগগুলো নিয়ে আলোচনা করা, জলবায়ু পরিবর্তন দ্বারা উদ্ভূত বৈশ্বিক নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ এবং প্রস্তুতিতে প্রভাব মোকাবেলা এবং প্যারিস চুক্তি অনুযায়ী ২০৫০ সালে কার্বণ নির্গমনে গড়- শূণ্য (net zero) লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে প্রকৃতি-ভিত্তিক সমাধানের ভূমিকা মোকাবেলা করা, ইত্যাদি।

জো বাইডে নিম্নলিখিত নেতাদের শীর্ষ সম্মেলনে অংশ নিতে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন:

• গ্যাস্টন ব্রাউন, প্রধানমন্ত্রী, অ্যান্টিগুয়া এবং বার্বুডা
• আলবার্তো ফার্নান্দেজ, রাষ্ট্রপতি, আর্জেন্টিনা
• স্কট মরিসন, প্রধানমন্ত্রী, অস্ট্রেলিয়া
• শেখ হাসিনা, প্রধানমন্ত্রী, বাংলাদেশ
• লোটে শেরিং, প্রধানমন্ত্রী, ভুটান
• জাইর বলসোনারো, রাষ্ট্রপতি, ব্রাজিল
• জাস্টিন ট্রুডো, প্রধানমন্ত্রী ,কানাডা
• সেবাস্তিয়ান পাইরে, রাষ্ট্রপতি, চিলি
• শি জিনপিং, রাষ্ট্রপতি, চীন প্রজাতন্ত্র
• আইভান ডিউক মার্কেজ, রাষ্ট্রপতি, কলম্বিয়া
• ফ্যালিক্স তিশিসেদী, রাষ্ট্রপতি, কঙ্গোর গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র
• মেটে ফ্রেডেরিক্সেন, প্রধানমন্ত্রী, ডেনমার্ক
• উরসুলা ভন ডের লেইন, রাষ্ট্রপতি, ইউরোপীয় কমিশন
• চার্লস মিশেল, প্রেসিডেন্ট, ইউরোপীয় কাউন্সিল
• এমমানুয়েল ম্যাক্রন, রাষ্ট্রপতি, ফ্রান্স
• আলী বনগো ওন্ডিম্বা, রাষ্ট্রপতি, গ্যাবন
• অ্যাঞ্জেলা মের্কেল, চ্যান্সেলর, জার্মানি
• নরেন্দ্র মোদী, প্রধানমন্ত্রী, ভারত
• জোকো উইদোডো, রাষ্ট্রপতি, ইন্দোনেশিয়া
• বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু, প্রধানমন্ত্রী, ইস্রায়েল
• মারিও ড্রাগি, প্রধানমন্ত্রী, ইতালি
• অ্যান্ড্রু হলনেস, প্রধানমন্ত্রী, জ্যামাইকা
• ইয়োশিহিদ সুগা, প্রধানমন্ত্রী, জাপান
• উহুরু কেনিয়াট্টা, রাষ্ট্রপতি, কেনিয়া
• ডেভিড কাবুয়া, রাষ্ট্রপতি, মার্শাল দ্বীপপুঞ্জের প্রজাতন্ত্র
• অ্যান্ড্রেস ম্যানুয়েল ল্যাপেজ ওব্রেডোর, রাষ্ট্রপতি, মেক্সিকো
• জ্যাকিন্ডা আর্ডারন, প্রধানমন্ত্রী, নিউজিল্যান্ড
• মুহম্মুদু বুহারী, রাষ্ট্রপতি, নাইজেরিয়া
• এরনা সলবার্গ, প্রধানমন্ত্রী, নরওয়ে
• আন্দ্রেজেজ দুদা, রাষ্ট্রপতি, পোল্যান্ড
• মুন জায়ে-ইন, রাষ্ট্রপতি, কোরিয়া প্রজাতন্ত্র
• ভ্লাদিমির পুতিন, রাষ্ট্রপতি, রাশিয়ান ফেডারেশন
• কিং সালমান বিন আবদুলাজিজ আল সৌদ, সৌদি আরব
• লি হিসিয়েন লুং, প্রধানমন্ত্রী, সিঙ্গাপুর
• মাতামেলা সিরিল রামফোসা, রাষ্ট্রপতি, দক্ষিণ আফ্রিকা
• Spain প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ, স্পেন
• রেসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান, রাষ্ট্রপতি, তুরস্ক
• শেখ খলিফা বিন জায়েদ আল নাহিয়ান, রাষ্ট্রপতি, সংযুক্ত আরব আমিরাত
• বরিস জনসন, প্রধানমন্ত্রী, যুক্তরাজ্য
• নুগেইন ফ্যা ট্রাং, প্রেসিডেন্ট, ভিয়েতনাম

সম্মেলনের এজেন্ডা সম্পর্কিত আরও বিশদ, অতিরিক্ত অংশগ্রহণকারী, মিডিয়া অ্যাক্সেস এবং জনসাধারণের দর্শনের বিষয়সমূহ আগামী সপ্তাহগুলোতে সরবরাহ করা হবে।