নদী দূষণ নিয়ে একের পর এক ঘটনা ঘটতেই আছে। নদীর উপর দিয়ে অত্যাচার শেষ হবে কবে এটাই প্রশ্ন এখন। নদীমাতৃক এই বাংলাদেশে নদীর উপর নির্ভর করে বেঁচে আছে হাজার হাজার মানুষ। দেশের পরিবেশ দূষিত হওয়ার ফলে প্রতিবছর ক্ষতি অনেক জান ও মালের। এবার দেখা যাচ্ছে ছোট যমুনার বেহাল দশা। ছোট যমুনা নওগাঁ শহরের মধ্যে দিয়ে বয়ে যাওয়া একটি নদী। আর হঠাৎই এই নদীর পানি ধারণ করেছে কালচে রং।
নওগাঁ শহরের মধ্যে দিয়ে বয়ে যাওয়া নদীর পানির কালচে বর্ণ ধারণ করার জন্য দায়ি করা হচ্ছে দেশের বৃহত্তম চিনিকল জয়পুরহাটের চিনিকলকে।
এলাকাবাসীর তথ্য অনুযায়ী এই নদীর পানি গত কয়েকদিন আগেই ছিলো স্বচ্ছ ও দূষণমুক্ত কিন্তু এখন এই পানির রং কালচে। স্থানীয়দের দাবি পানির রং কালচে ধারণ করার জন্য দায়ি জয়পুরহাটের চিনিকল। স্থানীয়রা বলছেন, ফেব্রুয়ারি মাসের শেষ সময়ে উজান থেকে এই কালচে পানি আসা শুরু করে।
এদিকে নদীদূষণের কারণে প্রশাসনের পাশাপাশি উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে পরিবেশবাদী সংগঠনের সদস্যবৃন্দের সাথে স্থানীরা। স্থানীয় মানুষের ধারণা পাশের জয়পুরহাট জেলার জয়পুরহাট চিনিকলের বিভিন্ন বর্জ্য তুলসীগঙ্গা নদী দিয়ে প্রবেশ করে ছোট যমুনায়। পাশাপাশি নওগাঁ শহর এবং আশপাশের এলাকার বিভিন্ন পোলিট্রি ফার্ম ও চালকলসহ অন্যান্য কলকারখানার বর্জ্যের কারণে দূষিত হচ্ছে কয়েক হজার মানুষের ব্যবহৃত এই ছোট যমুনা।
নদী দূষণের ফলে দেখা যাচ্ছে মরা মাছ। পানি দূষিত হওয়ার কারণে নদীতে মাছের সাথে সাথে দেখা যাচ্ছে বিভিন্ন জলজ প্রাণী মরে ভেসে উঠছে।
স্থানীয়দের মত যে, শুধু চিনিকল নয় নদীদূষণের জন্য দায়ি রয়েছে স্থানীয় চালকলসহ কয়েকশত মুরগির খামারও। মুরগির খামার থেকে মরা মুরগিগুলোকে বস্তাবন্দী করে ফেলা হয় নদীতে যার ফলে পানি দূষিত হয়ে মাছ ও অন্যান্য সকল জলজ প্রাণী মারা যাচ্ছে।
স্থানীয় মানুষদের মতামত অনুযায়ী নদীর পানির দূষণের অন্যতম প্রধান কারণ হচ্ছে জয়পুরহাট চিনিকল কিন্তু এ বিষয় ভিন্ন কথা বলছেন চিনিকলের মহাব্যবস্থাপক খুরশিদ জাহান মাফরুহা। তিনি বলছেন যে, চিনিকলের বর্জ্য ফেলার জন্য রয়েছে ৬০০ মিটার দীর্ঘ খাল। গত একমাস আগে থেকে বন্ধ রয়েছে চিনিকলের উৎপাদন যার ফলে খালটি এখন শুকনো অবস্থায় । তিনি বলেন, চিনিকলের যে বর্জ্য তুলসীগঙ্গা ও ছোট যমুনায় ফেলার কথা উঠেছে সেটা ঠিক নয়। তার দাবি নদী দূষণের জন্য চিনিকল কোনভাবে দায়ি নয়। তিনি দাবি করছেন বিভিন্ন পোলট্রি ফার্মের বর্জ্য নদীতে ফেলা ও একই সাথে নদীর পাড়ে জমে থাকা ময়লা নদীতে পড়ার কারণে এই দূষণ হয়েছে।