চেনার উপায় নাই যে এটা লৌহজং নদী
একসময়ের খরস্রোতা নদী ছিলো লৌহজং। টাঙ্গাইল শহরের বুক চিরে বয়ে গেছে এই নদী। একসময় এই নদী দিয়ে যাতায়াত করতো বড় বড় নৌকা, ঘাটে নোঙর করত মালবাহী বড় জাহাজ। এ অঞ্চলের ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসারের ক্ষেত্রে লৌহজং নদীর ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
ঢাকা এবং আশেপাশের জেলাগুলো থেকে খুব সহজে এ নদীর মাধ্যমে টাঙ্গাইল জেলা শহরে প্রবেশ করা যেত। যার ফলে যাত্রী পরিবহন ও মালামাল স্থানান্তরের আরামদায়ক পথ ছিল এই নদী। অর্থনৈতিক ও সামজিক উন্নয়নে নদীর ভূমিকা অনস্বীকার্য।
আজকের এই আধুনিক টাঙ্গাইল শহরের উন্নতি হয়েছিল লৌহজং নদীকে কেন্দ্র করে। কিন্তু কালের বিবর্তনে নদীই যেন আজকে হারিয়ে যেতে বসেছে তার রুপ। দখল-দূষণ, ভরাট আর কচুরিপানায় এ নদী চেনা দায়।
নদীর দুপাশ দখল করে গড়ে তোলা হয়েছে বিভিন্ন স্থাপনা। যার কারনে নদী পরিণত হয়েছে সরু খালে। যথাযথ খননের অভাবে নদী ভরাট হয়ে যাচ্ছে। শিল্প ও আবাসিক বর্জ্য কোনো রকম প্রক্রিয়াকরণ ছাড়াই ফেলা হচ্ছে নদীতে।
যার ফলে দূষণের শিকার হচ্ছে এ নদী। ময়লা-আর্বজনার স্তূপ নদীর অধিকাংশ জায়গায়। কচুরিপানায় ছেয়ে গেছে পুরো নদী। বিভিন্ন জায়গায় স্বাভাবিক পানি প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হওয়ায় বর্ষা মৌসুম ছাড়া লৌহজং সারা বছর মৃতই থাকে।
এ নদীকে বাঁচাতে হলে অবশ্যই জনসচেতনতা সৃষ্টির পাশাপাশি মিলেমিশে একত্রে কাজ করতে হবে। প্রথমেই লৌহজংকে দখলমুক্ত করতে হবে। দূষণের হাত থেকে রক্ষায় শিল্প এবং মানুষের সৃষ্ট বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণের বিকল্প নেই।
নদী খননের মাধ্যমে এর ভরাট হওয়া রোধ করতে হবে। কচুরিপানা অপসারণ তো বটেই। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আকুল আবেদন থাকল।