মোঃ রাজিবুল ইসলাম : সবুজশ্যামলে ঘেরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় অন্যতম স্থান দখল করে আছে। আর কত দিন থাকবে এই সবুজশ্যামলে ঘেরা বিশ্ববিদ্যালয় এটি নিয়ে সংখ্যায় আছেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বিভিন্ন কারণে দেখিয়ে কাটা হচ্ছে গাছ। বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের আশপাশের পাহাড় থেকেই কাটা হচ্ছে এসকল গাছ। জরিপে উঠে এসেছে গত ৪ বছরে প্রায় ৭ হাজারের মতো গাছ কাটা হয়েছে। যাঁরা গাছ কাটছে তাদের দাবি সেকল গাছ স্থানীয় ও গ্রামবাসীদের লাগানো। অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয় বলছে ভিন্ন কথা। বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবি সীমানা নির্ধারন না হওয়ার কারণে গাছ কাটায় বাধা প্রদান করতে পারছেন কর্তৃপক্ষ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের আশপাশের পাড়ার থেকে গাছ কাটার জন্য পাহার কেটে তৈরি করা হয়েছে ৫ কিলোমিটার রাস্তা। আর সেই রাস্তার মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটক দিয়েই বের করা হচ্ছে কাটা গাছ। বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন নাম প্রকাশ না করে বলছেন আর এক তথ্য, তারা বলছেন এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজনও আছেন জড়িত।
রাস্তা তৈরির আগেও গাছ কাটা হতো কিন্তু রাস্তা হওয়ার পরে গাছ কাটার পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছেেএতে গড়ে দৈনিক ৫টি গাছ কাটা হচ্ছে সেই হিসেবে গত চার বছরে গাছ কাটা হয়েছে প্রায় ৭ হাজারের মতো। আর পাহাড় থেকে কাটা এই সকল গাছ ব্যবহার হচ্ছে ইটভাটার জ্বালানী হিসিবে।
প্রতিনিয়ত বিভিন্ন প্রজাতির গাছ কাটার জন্য ঝুঁকিতে পড়ে গেছে এখানকার জীববৈচিত্র্য। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে এই ব্যাপারে বন বিভাগ, পরিবেশ অধিদপ্তর এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো পদক্ষেপ লক্ষা করা যাচ্ছে না।
এদিকে পাহার থেকে গাছ কেটে এনে রাখা হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববিজ্ঞান অনুষদের পুকুরপাড় এবং কলা অনুষদের ঝুপড়িতে। বিষয়টি একটু অন্যরকম মনে হতে পারে কিন্তু আসল সত্য হচ্ছে নির্বিচারে পাহার কেটে গাছের টুকরোগুলো রাখা হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়েই কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় কিছু জানে না। যেখানে বৃক্ষ রোপনের উপরে জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছে সরকার ও সচেতন সমাজ অন্যদিকে গাছ কেটে সাবাড় করা হচ্ছে পাহাড়ের।
নির্বিচারে গাছ কাটার ফলে হুমকির মুখে রয়েছে ক্যাম্পাস ও তার চারপাশের পরিবেশসহ জীববৈচিত্র্য। বিশেষ করে নষ্ট হচ্ছে বন্য প্রাণীদের আবাসস্থল। প্রতিনিয়ত বন ধ্বংস করার ফলে আমাদের চার পাশের জীববৈচিত্র্য ধ্বংস হচ্ছে জেনেও নির্বিচারে কাটা হচ্ছে গাছ। বনে বসবাসরত প্রাণীরা নেমে আসছে সমতলে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক মো. ফরিদ আহসান জানান, এখানকার এন আগে যেসব প্রাজাতির যে পরিমাণ প্রাণী দেখা যেতে সেখানে দিন দিন কমে আসছে। প্রাণীবৈচিত্র্য রক্ষা করতে হচ্ছে অতিদ্রুত গাছকাটা বন্ধ করতে হবে। না হলে যে পরিমাণ প্রাণীবৈচিত্র্য আছে তাও হারিয়ে যাবে আমাদের মাঝ থেকে।