ক্ষতির ঝুঁকিতে বাংলাদেশ – বায়ু দূষণে আবারো শীর্ষে ঢাকা, দ্বিতীয় দিল্লি
বাংলাদেশ, ঢাকা: আজ ৫ ডিসেম্বর শনিবার বিশ্বের দূষিত বাতাসের শহরের তালিকায় মারাত্মক বায়ুদূষণের চরম অস্বাস্থ্যকর মাত্রায় পৌঁছার কারণে (শীর্ষে) রয়েছে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা। এয়ার ভিউজ্যুয়ালের দেওয়া তথ্যানুযায়ী সকাল থেকে ঢাকার বায়ুমান ছিল স্বাভাবিকের তুলনায় সাতগুণ বেশি দূষিত।
অন্যদিকে বৈশ্বিক দূষিত শহরের তালিকায় দুই নম্বরে অবস্থান করছে দিল্লী এবং তৃতীয় অবস্থানে আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুল।
বাতাসের মান ২৬৩ (প্রতি ঘনমিটার বাতাসে সুক্ষ ধূলিকণা ছিল ৩২৯.২ মাইক্রোগ্রাম) নিয়ে এখন দূষিত শহরের শীর্ষে ঢাকা। অন্যদিকে বাতাসের মান ২৬১ স্কোর নিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ভারতের রাজধানী দিল্লি।
যুক্তরাষ্ট্রের সংস্থা এয়ার ভিজ্যুয়াল এই রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। এছাড়া বাতাসের মান ২১৬ নিয়ে পাকিস্তানের লাহোর তৃতীয় ও ১৮৭ নিয়ে চতুর্থ স্থানে পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা।
একিউআই সূচকে ৫০ এর নিচে স্কোর থাকার অর্থ হলো বাতাসের মান ভালো বা স্বাভাবিক। ৫১ থেকে ১০০ স্কোরের মধ্যে থাকলে বাতাসের মান গ্রহণযোগ্য, ১০১ থেকে ১৫০ হলে সাধারণ নগরবাসী বিশেষ করে শিশু, বয়স্ক ও অসুস্থ রোগীরা স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়ে, ১৫১ থেকে ২০০ হলে ‘অস্বাস্থ্যকর’ হিসেবে বিবেচিত হয় যা নগরবাসীর প্রত্যেকের স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব পড়তে পারে, ৩০১ থেকে ৫০০ বা তারও বেশি হলে বাতাসের মান ঝুঁকিপূর্ণ মনে করা হয় এবং এসময় স্বাস্থ্য সতর্কতাসহ প্রত্যেক নগরবাসীর জন্য জরুরি অবস্থা হিসেবে বিবেচিত হয়।
বিশ্বে দূষিত শহরের তালিকায় পাঁচ নম্বরে ভারতের মুম্বাই, ছয় নম্বরে কুয়েত সিটি ও সাত নম্বরে রয়েছে মঙ্গোলিয়ার উলানবাটর। ইউক্রেনের কিয়েভ রয়েছে আট নম্বরে ও বিশ্বের নয় নম্বর দূষিত শহর হলো উজবেকিস্তানের তাসখান্দ। আর বিশ্বের ১০ নম্বর দূষিত শহর চীনের ওহান।
বৈশ্বিক বায়ু পরিস্থিতি-২০১৭ এর শীর্ষক প্রতিবেদনে বিশ্বে দূষিত বায়ুর শহরগুলোর মধ্যে দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল ঢাকা এবং তার পরই পাকিস্তানের করাচি ও চীনের বেইজিং আর শীর্ষে ছিলো ভারতের দিল্লি। এই দূষণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির ঝুঁকিতে বাংলাদেশ ছিল যা এখন প্রথমে অবস্থান করছে।
দূষিত বাতাস নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই হিমশিম খাচ্ছে জনবহুল ঢাকা, মূলত নির্মাণ কাজের নিয়ন্ত্রণহীন ধুলা, যানবাহনের ধোঁয়া, ইটভাটা প্রভৃতি কারণে রাজধানীতে দূষণের মাত্রা চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে।
বিশ্বব্যাংক ও পরিবেশ অধিদপ্তরের এক প্রতিবেদনে ঢাকার বায়ুদূষণের প্রধান কারণ হিসেবে এই শহরের চারপাশে অবস্থিত ইটভাটাকে চিহ্নিত করা হয়েছে। অবিশ্বাস্য বিষাক্ত গ্যাসের মধ্যেই বাস করছে শহরটির প্রায় দেড় কোটি মানুষ।
মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার এক পর্যালোচনা সূত্র জানা যায়, ঢাকার বাতাসে দূষণের মাত্রা গত ১০ বছরে ৮৬ শতাংশ বেড়েছে।
আর যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বৈশ্বিক বায়ুদূষণ পর্যবেক্ষণকারী প্রতিষ্ঠান এয়ার ভিজ্যুয়ালের সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী, বাংলাদেশে গড় বায়ু দূষণের পরিমাণ ৯৭ দশমিক ১০, যেখানে পাকিস্তানের ৭৪ দশমিক ২৭, ভারতের ৭২ দশমিক ৫৪, আফগানিস্তানের ৬১ দশমিক ৮০ এবং বাহরাইনের ৫৯ দশমিক ৮০ পিএম২.৫।