ক্যান্সার ঝুঁকি বাড়ায় এমন খাদ্যগুলো- জানুন ও এড়িয়ে চলুন
তাহসিন তাহা (স্টুডেন্ট, ডিপার্টমেন্ট অব ল,
নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা)
মরনব্যাধি রোগ ক্যানসার। প্রতি দিনই ক্যানসার আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাস ও আধুনিক জীবনযাত্রার নানা ক্ষতিকারক দিকও এমন মরণ অসুখের দিকে ঠেলে দিচ্ছে মানুষকে।
শুধুমাত্র জাঙ্ক ফুডই ক্যানসারের কারন নয় বরং অনেক রুচিসম্মত ও তথাকথিত স্বাস্হ্যসম্মত খাদ্যও মরনব্যাধি ক্যানসারের কারণ হয়ে দাড়ায় ।
নিম্নে ১৭ টি খাবারের তালিকা দেওয়া হলো যা ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায় –
১. প্রক্রিয়াজাত মাংসঃ
বিশ্ব খাদ্যসংস্থ WHO জানিয়েছেন- প্রক্রিয়াজাত মাংস খেলে ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ে। প্রক্রিয়াজাত মাংসের মধ্যে উল্লেখযোগ্য রয়েছে – সসেজ, হটডগ, বেকন, ইত্যাদি।
এই মাংসগুলো প্রক্রিয়াজাতকরণে বিপুল পরিমাণ লবনের পাশাপাশি বিপজ্জনক রাসায়নিক পদার্থ বিশেষ করে নাইট্রেট এবং নাইট্রাইট যুক্ত হয়। এই সকল পদার্থ সংযোজনের মূল উদ্দেশ্য হল আকর্ষণীয় ও দীর্ঘস্থায়ী করা। কিন্তু প্রক্রিয়াজাত মাংস মানুষের শরীরের জন্যে ঝুঁকিপূর্ণ এমনকি ক্যান্সারের কারন হয়ে দাঁড়াতে পারে।
বিকল্প পন্থাঃ প্রক্রিয়াজাত মাংস পরিহার করে বেশিরভাগ তাজা ও জৈব মাংস (Organic meat) খাওয়া উচিৎ এবং নূন্যতম প্রক্রিয়াকরণসহ যে কোনো পণ্য সংরক্ষণ করুন কিন্তু তা যেনো প্রিজার্ভেটিভ বিহীন হয়।
২. সোডা/কোল্ড-ড্রিঙ্কঃ
ক্যান্সারের অন্যতম কারণ সোডা/কোল্ড-ড্রিঙ্ক। অধিক পরিমাণে চিনি ও ক্ষতিকর রংয়ের ব্যবহারের জন্যে এটি স্বাস্থ্যের জন্যে উপযোগী নয় এবং ক্যান্সারের জন্যও ঝুঁকিপূর্ণ।
বিকল্প পন্থাঃ সুস্বাস্থ্যের জন্যে পরিস্কার ও জীবানুমুক্ত পানিই সবচেয়ে উপকারী। পানিতে কোনো ভেজাল নেই।
৩. গ্রিল করা মাংসঃ
ছোট থেকে বড় অধিকাংশ মানুষের পছন্দের খাবার গ্রিল করা মাংস (Steak)। বর্তমানে এই খাবারটি বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। কিন্তু এটি স্বাস্থ্যের জন্যে ঝুঁকিপূর্ণ। এতে রয়েছে ক্যান্সারের ঝুঁকি।
কেননা স্টেক কিংবা গ্রিল করার জন্যে ব্যবহৃত উচ্চ তাপমাত্রা ক্যান্সার সৃষ্টিকারী হাইড্রোকার্বন সৃষ্টি করে, যা স্বাস্থ্যের জন্যে ক্ষতিকর।
বিকল্প পন্থাঃ অল্প পরিমাণে লাল মাংস(Red meat) খাওয়া উচিৎ, সাবধানে রান্না করুন এবং জৈবিক(Organic) ও ঘাস খাওয়ানো গরুর মাংস বাছাই করুন।
৪. মাইক্রোওয়েব পপকর্নঃ
সকল বয়সী মানষের পছন্দের খাদ্য তালিকার মধ্যে পপকর্ন অন্যতম। পপকর্ন শরীরের জন্যে স্বাস্থ্যকর হলেও পপকর্নের প্যাকেট অধিকাংশ ক্ষেত্রে অস্বাস্থ্যকর হয়ে দাঁড়ায়।
কারন বেশিরভাগ মাইক্রোওয়েব পপকর্নের প্যাকেটে থাকে ‘পারফ্লুরোঅক্টানোইক’ এসিড নামক রাসায়নিক উপাদান। আর এই রাসায়নিক উপাদানই স্তন, বৃক্ক, মূত্রথলি, প্রোস্টেট, ফুসফুস, থাইরয়েড, লিউকেমিয়া এবং লিম্ফোমা ক্যান্সারের জন্যে দায়ী।
বিকল্প পন্থাঃ ক্যান্সারের ঝুঁকি থেকে বাঁচতে কাঁচা ভুট্টার বিচ কিনে চুলায় ভেজে খাওয়া ঝুঁকি মুক্ত ও উপকারী।
৫.ক্যান জাতীয় খাদ্যঃ
ক্যানজাতীয় খাবার অধিক বিপজ্জনক। কারণ, ক্যানে ৱাসারনিক পদার্থ বিপিএ (Bisphenol A -BPA, is an organic synthetic compound with the chemical formula (CH3)2C(C6H4OH)2 BPA) থাকে যা স্বাস্থ্যের জন্য হানীকর। অধিকন্ত, ক্যানের খাদ্য তাজা ও মচমচ থাকার জন্য ক্যানের ভিতরে সিসা ( Lead, Pb) এর প্রলেপ দেওয়া হয়- দীর্ঘদিন তাপে চাপে যা খাদ্যের সাথে মিশে যেতে পারে। তাই BPA যেমন ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ায়, তেমনি সিসা মানব শরীরে জটিল রোগের সৃষ্টি করে, বিশেষ করে শিশুদের বিদ্যা বুদ্ধি লোপ পাওয়া, হাবা গোবা হওয়া অন্যতম।
বিকল্প পন্থাঃ মূলত বিদেশী প্রক্রিয়াজাত করণ খাদ্য অভ্যাস ত্যাগ করা উচিৎ। তাছাড়া টাটকা ও ফ্রিজে রেখে এ সকল বস্তু খাওয়া যায়। এ সকল অনেক খাদ্য যেমন টমেটু, আম, কাঠাল, লিচু ইত্যাদি মৌসুমী সবজী ও ফল বাড়িতেই প্রক্রিয়াজাত করে ফ্রিজিং করে দীর্ঘদিন রাখা যায়।
৬.চাষ করা মাছঃ
রুই, কাতল, মৃগাল পুষ্টি সমৃদ্ধ ও স্বাস্থ্যকর খাদ্য। বানিজ্যিকভাবে চাষ করা মাছ চাষের ক্ষেত্রে ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস ও পরজীবির আক্রমণ থেকে বাঁচতে ব্যবহার হয় বিভিন্ন জীবণুরোধকারী ওষুধ, কীটনাষক ও অন্যান্য ‘কারসিনোগেনিক’ রাসায়নিক উপাদান। কারসিনোজেন (Carcinogen) হল ক্যানসার সৃষ্টিকারী উপাদান – the Substance that initiate cancer)। প্রাকৃতিক মাছের তুলনায় চাষ করা মাছে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিডের পরিমাণও কম থাকে।
বিকল্প পন্থাঃ সামুদ্রিক মাছ ও নদী, খাল, বিল তথা উন্মুক্ত জলাশয়ের মাছ খাদ্যতালিকায় অর্ন্তভুক্ত করুন ।
৭.হাইড্রোজেনেইটেড অয়েল বা ট্রান্স-ফ্যাটঃ
উদ্ভিজ্জ তেল বা ভেজিটেবল ওয়েল যেমন সয়াবিন, অলিভ, সূর্যমূখী ইত্যাদি খাবার তেল তৈরি করা হয় রাসায়নিক প্রক্রিয়ায়। কারণ, এ সমকল তেল সাধারনত হালকা রং বিহীন দেখায়।
তাই এগুলোকে গাড় এবং ছড়ানো অর্থাৎ বুদ বুদ দেখানোর জন্য হাইড্রোজেন গ্যাস অনু মিশানো হয় এবং গুনগত মান ,স্বাদ ও গন্ধ বৃদ্ধি করতে বিভিন্ন ধরণের রাসায়নিক উপাদান যোগ করা হয়। যার ফলে অস্বাস্হ্যকর ওমেগা-৬ চর্বি অত্যন্ত উচ্চমাত্রার হয়। ভেজিটেবল ওয়েল বা উদ্ভিজ্জতেল স্তন ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ায়।
বিকল্প পন্থাঃ তাই এর পরিবর্তে ব্যবহার করতে হবে ‘এক্সট্রা-ভার্জিন অলিভ অয়েল’, ‘এক্সট্রা-ভার্জিন কোকোনাট অয়েল’, দেশীয মিশিনে বা ঘানি ভাঙ্গানো সরিষার তেল, তিলের তেল, সরিষা ভাটা, তিলভাটা কিংবা ‘পাম অয়েল’।
৮.আলুর চিপসঃ
আলুর চিপস্ খেতে সুস্বাদু হলেও এতে প্রচুর পরিমাণে ট্রান্স-ফ্যাটও থাকে, যা কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়ায়। অতিরিক্ত লবণ যোগ করে ‘হাইড্রোজেনেইটেড ভেজিটেবল অয়েল’য়ে ভেজে তৈরি করা হয় ।
আর লবণে থাকা সোডিয়াম বাড়ায় রক্তচাপ। এছাড়াও আলুর চিপসে্ অনেক ধরনের প্রিজারভেটিভ এবং কৃত্রিম রং ব্যবহৃত হয় যা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর ।
আলুর চিপসকে মচমচে বানানোর জন্য উচ্চ তাপমাত্রায় ভাজা হয়। এতে ‘অ্যাক্রিলামাইড’ নামক ‘কারসিনোজেন (Carcinogen) ’ ধরনের বিষাক্ত উপাদান তৈরি হয়।
বিকল্প পন্থাঃ এজন্য দোকান থেকে চিপস কেনার পরিবর্তে ঘরেই চিপস বানিয়ে খাওয়া অভ্যাস করতে হবে।
৯. অ্যালকোহলঃ
সামায়িকভাবে কিছুটা আরাম অনুভব করার জন্য অনেকে অ্যালকোহল সেবন করেন। কিন্তু এমন অনেক মানুষ আছেন যারা অতিরিক্ত সেবন করেন।
অতিরিক্ত অ্যালকোহল সেবনে রক্তের ট্রাইগ্লিসারাইড লেভেল বৃদ্ধি পেতে পারে, যার ফলে রক্তনালীতে রক্ত জমাট বেঁধে হার্ট অ্যাটাক এবং স্ট্রোক হতে পারে।
রক্তের ট্রাইগ্লিসারাইড লেভেল বেশি পরিমাণে বৃদ্ধি পেলে প্যানক্রিয়াস বা অগ্ন্যাশয়ের প্রদাহ হতে পারে। ক্রমাগত অ্যালকোহল পান করলে ক্যান্সারের ঝুঁকি বেড়ে যায়।
অগ্ন্যাশয়ের রোগে ১০ বছরের মধ্যে ৬৯-৮০% লোকের মৃত্যর আশংকা থাকে (Andrada Seicean1 , Marcel Tanþãu1 , Mircea Grigorescu1 , Teodora Mocan1 , Radu Seicean2 , Teodora Pop1 1) 3rd Medical Clinic. 2) 1st Surgical Clinic, University of Medicine and Pharmacy, Cluj-Napoca)।
এছাড়াও অ্যালকোহেলে ঘাঁড়, অন্ননালী, লিভার, ব্রেস্ট ও কোলন ক্যানসার হয়।
বিকল্প পন্থাঃ অ্যালকোহল থেকে নিজেকে বিরত রাখায় উত্তম ।
১০. কৃত্রিম সুইটেনার
বিশেষ করে ডায়াবেটিক্ এর রোগীরা চিনির পরিবর্তে কৃত্রিম সুইটেনার ব্যবহার করে। সরবত, নিন্মমানের বিস্কুট ও মিষ্টি প্রস্তুতকারীরা এবং হোটেল রেস্তরায় মিষ্টি জাতীয় খাদ্য প্রস্তুতে ইহা ব্যহার করে থাকে। ইহা রাসায়নিক প্রক্রিয়া দ্বারা উৎপাদিত হয়। তাই কৃত্রিম সুইটেনার স্বাস্থ্যের জন্য একদমই নিরাপদ নয়।
গবেষণা করে গবেষকেরা পরামর্শ দিয়েছেন যে, কৃত্রিম সুইটেনারগুলি দেহে টক্সিন ডি কেপি তৈরি করে এবং মস্তিষ্কের টিউমার হওয়ার ঝুঁকি তৈরি করে।
বিকল্প পন্থাঃ আপনার যদি অবশ্যই মিষ্টি ব্যবহার করতে হয় তবে উদ্ভিদ-ভিত্তিক স্টেভিয়া চয়ন করুন। কিছু নির্দিষ্ট রেসিপি সুইটেনারের জন্য অ্যাপলসওকে বিকল্প হিসাবে রাখতে পারে। আখের গুড় বা আখের চিনি ব্যবহার করুন।
১১.ফ্রেঞ্চ ফ্রাইঃ
ফ্রেঞ্চ ফ্রাই খেতে ভালোবাসে না এমন কেউ নেই। ছোট থেকে বড় সকলের প্রিয় খাবার এটি। তবে ট্রান্স ফ্যাট-এ ভাজা এবং তারপর অতিরিক্ত নুন ব্যবহার করার কারনে এই খাবার ক্যান্সারের ঝুঁকি তৈরি করে।
একইসাথে এই জাতীয় খাবার উচ্চ তাপমাত্রায় তৈরী হয় বলে, এতে অ্যাক্রিলামাইড থাকে। এতে ‘অ্যাক্রিলামাইড’ নামক ‘কারসিনোজেন(Carcinogen) ’ ধরনের বিষাক্ত উপাদান তৈরি হয়। যা সাধারণত সিগারেটে মেলে।
বিকল্প পন্থাঃ ফ্রেঞ্চ ফ্রাইয়ের জন্য কিছু রেসিপি পরীক্ষা করে দেখুন। স্বাদযুক্ত মশলা এবং জলপাই তেল ব্যবহার করে খুব সুস্বাদু এবং অনেক স্বাস্থ্যকর ফ্রেঞ্চ ফ্রাই ঘরে তৈরী করুন।
১২.প্রক্রিয়াজাতকরণ ও কৃত্রিম চিনিঃ
শরীরে ইনসুলিনের মাত্রা বাড়ানোর পাশাপাশি প্রক্রিয়াজাত চিনি ক্যান্সার কোষের প্রিয় খাবারগুলো মধ্যে অন্যতম। সুতরাং বলা যায় যে, ক্যান্সার কোষের বৃদ্ধিতে সহায়ক। মেডিসিন বিভাগে নোবেল পুরষ্কার প্রাপ্ত জার্মান চিকিৎসক ওটো ওয়ারবার্গ ১৯৩১ সালে প্রথম আবিষ্কার করেছিলেন যে, টিউমার ও ক্যান্সার কোষ বেড়ে উঠতে উচ্চ মাত্রায় ‘ফ্রুক্টোজ’যুক্ত চিনির উপর নির্ভরশীল।
বিকল্প পন্থাঃ তাই প্রক্রিয়াজাত কিংবা কৃত্রিম চিনির পরিবর্তে মধু, গুড়, আখের গুড় বা চিনি, ম্যাপল সিরাপ ইত্যাদি ব্যবহার করতে পারেন।
১৩. ওজন কমানোর খাদ্য বা ডায়েট ফুডঃ
অনেকে ঘরের তৈরি স্বাস্থ্যকর খাদ্য পরিহার করে ডায়েট ফুডের উপর নির্ভরশীল।
যার মধ্যে রয়েছে প্যাকেটজাত খাবার এবং ডায়েট কোকের মতো নরম পানীয়। এই সব খাবারে ওজন কমে ঠিকই, তবে ক্যানসারের সম্ভাবনা বাড়তে পারে বলেই মত বিশেষজ্ঞদের।
বিকল্প পন্থাঃ প্যাকেটজাত খাবারের বদলে তাজা, সবুজ শাক-সবজি খাবার খাবেন ।
১৪. মার্জারিনঃ
মার্জারিন মাখনের জন্য স্বাস্থ্যকর বিকল্প বলে মনে করা হয়েছিল। তবে দেখা যাচ্ছে যে, মার্জারিন হাইড্রোজেনেটেড উদ্ভিজ্জ তেল থেকে তৈরি এবং ট্রান্স ফ্যাটগুলিতে পূর্ণ। সাম্প্রতিক সমীক্ষায় পরামর্শ দেওয়া হয়েছে যে, ট্রান্স ফ্যাটগুলো মাখনের মধ্যে পাওয়া স্যাচুরেটেড ফ্যাটগুলির চেয়ে বেশি বিপজ্জনক।
বিকল্প পন্থাঃ মার্জারিন যতোটুকু সম্ভব পরিহার করুন।
১৫.নন-অর্গানিক ফল এবং সবজিঃ
যে সকল ফল ও ফসল অর্গানিক সার যেমন সবুজ সার ব্যবহার করে উৎপন্ন করে সেগুলো হ’ল অর্গানিক ফল এবং সবজি। আর যে ফল ও ফসল রাসায়নিক সার, পোঁকামকড় প্রতিরোধে রাসায়নিক ঔষধ ব্যবহার করা হয়ে থাকে সে সকল হ’ল নন-অর্গানিক ফল এবং সবজি।
ফল এবং সবজি অত্যন্ত স্বাস্থ্যকর এবং খেতেও সুস্বাদু। কিন্তু চাষ করার সময় এদের ওপর যে কিটনাশক স্প্রে করা হয় তা কিন্তু স্বাস্থ্যকর নয় মোটেই। আগাছা মারার ঔষুধ ইউরোপে নিষিদ্ধ করা হয়েছে, কারণ এটি মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর।
বিকল্প পন্থাঃ যতটা সম্ভব তাঁজা কিনুন এবং খাওয়ার আগে সমস্ত পণ্য সাবধানে ধুয়ে নিন।
১৬.পরিশোধিত সাদা আটা বা ময়দাঃ
পরিশোধন প্রক্রিয়াটি মূল গম থেকে সমস্ত পুষ্টির মূল্য সরিয়ে দেয়। আরও খারাপ দিক হলো, ময়দাটিকে ক্লোরিন গ্যাস দিয়ে ব্লিচ করা হয় যাতে আকর্ষণীয় সাদা রঙ হয়। সাদা ময়দা এমন একটি শর্করা যা সাধারণ চিনির ন্যয় ক্যান্সারের দ্রুত প্রসার ঘটায়।
বিকল্প পন্থাঃ তাই পরিশোধিত সাদা আটার পরিবর্তে গমের লাল আটা, কাঠবাদাম বা বার্লির আটা খাওয়া ভালো।
১৭. জেনেটিক্যালি পরিবর্তিত খাদ্য (GMO Foods)
আজকাল ফল- ফসলের জেনিটিক DNA এর পরিবর্তন ঘটিয়ে খাদ্যের উৎপাদন বৃদ্ধি ও সারা বছরের ফল ও ফসলের উৎপাদন ঘটানো হচ্ছে। যেমন অসময়ে টমেটু, আম, কমলা, পেঁপে ইত্যাদি। যুক্তরাষ্টের উুৎপাদিত গমের ৯০%ই জিএমও।
জিএমও খাদ্যের নিরাপত্তা নিয়ে তীব্র বিতর্ক রয়েছে। জিএমও বিশাল খাদ্য উৎপাদক, কারণ তারা পোকামাকড় প্রতিরোধ, পরিবহন সহজ, এবং দীর্ঘস্থায়ী করার জন্য পরিবর্তন করা হয়েছে। মূলত: বিশ্বের বৃহৎ বৃহৎ বীজ ও খাদ্য বিপণন কোম্পাণীগুলো এর ক্ষতিকর দিকগুলো প্রকাশে বাধা সৃষ্টিতে সরকারী ও বেসরকারী সংস্থাসমূহ ও কর্মকর্তা এবং রাজনৈতিক পরিমন্ডলে বিলিয়ন বিলিয়ন অর্থ ব্যয় করছে।
জিএমও কে কখনো জিইও অর্থাৎ জেনেটিক্যালী ইঞ্জিনিয়ার্ড অর্গানিজম ও বলা হয়। কৃত্রিমভাবে কোন জেনেটিক ইনফরমেশন, অর্গানিজমে ঢুকিয়ে দিয়েই জিএমও তৈরী করা হয় অর্থাৎ কোন একটি অর্গানিজমে, কাঙ্খিত বৈশিষ্ট্যের নিউক্লিওটাইড সিকুয়েন্স অর্থাৎ এ্যালিয়েন ডিএনএ পরীক্ষাগারে কৃত্রিমভাবে ঢুকিয়ে, অর্গানিজমকে জেনেটিক্যালি মেনিপুলেট করে কাঙ্খিত বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন করা হলে ওই অর্গানিজমকে জিএমও বলে।
গবেষনায় দেখা গিয়েছে যে, জিএম ফসলের অন্য জীব থেকে ঢুকানো জেনেটিক ইনফরমেশন, মানুষের পাকস্থলী ও অন্ননালীর মাধমে হজম হতে পারে না অথবা কখনো কখনো রক্তের মাধ্যমে সাধারণ ডিএনএ সাথে মিশে যেতে পারে এবং আচরনের পরিবর্তন আনে।
এর ফলে ব্রেস্ট ক্যান্সার, প্রোস্টেট ক্যান্সার এবং কোলন ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা ১০০ ভাগ বেড়ে যায়। এছাড়া সেক্স ক্রোমোজোমে প্রভাব ফেলতে পারে, এতে সেক্স ইনফর্টিলিটি বা বন্ধ্যাত্ব দেখা দিতে পারে।
বিকল্প পন্থাঃ জিএমও ফুড পরিহার করা উত্তম।
প্রতি দিনের খাদ্যতালিকাতেও যোগ করা উচিত এমন কিছু খাবার, যা শরীরে রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা বাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে ক্যানসার প্রতিরোধেও বিশেষ ভূমিকা নেয়। তাই সুস্বাস্থ্য থাকতে উপরে বর্ণিত খাবারগুলো বর্জন করা উত্তম। যদি একবারে সম।ভব না হয় তবে মাত্রারিক্ত বর্জন করুন। স্বাস্থ্যসম্মত ও তাঁজা খাবার গ্রহণ করুন এবং নিজেকে সুস্থ রাখুন।
Source: Health and Human, Healthline, WIKIPEDIA