কোনভাবেই নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসা যাচ্ছেনা কানাডায় দাবানল, সেনা পাঠানোর প্রস্তুতি
তীব্র দাবদাহ থেকে কানাডার পশ্চিমাঞ্চলে সৃষ্ট দাবানল নিয়ন্ত্রণে আনতে এবং শহরগুলো থেকে বাসিন্দাদের দ্রুত সরিয়ে নিতে সেনাবাহিনীর উড়োজাহাজসহ নানা সহায়তা প্রস্তুত রেখেছে দেশটির সরকার। স্থানীয় সময় সোমবার কানাডা এ সকল প্রস্তুতি শেষ করে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি।
দেশটির দাবানল নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, কানাডার ব্রিটিশ কলম্বিয়া প্রদেশে মোট ১৪৩টি দাবানল সক্রিয় রয়েছে। এর মধ্যে ৭৭টি সৃষ্টি হয়েছে গত ২ দিনে। দাবানলগুলোর বেশির ভাগই বজ্রপাত থেকে সৃষ্ট হয়েছে।
কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো জানান, তিনি এরই মধ্যে ব্রিটিশ কলম্বিয়ার ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোর বিভিন্ন দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলেছেন। ওই এলাকাগুলোর বিভিন্ন সমস্যা খুঁজে বের করতে বিশেষ একটি দলও গঠন করা হবে।
এ বিষয়ে কানাডার প্রতিরক্ষামন্ত্রী হারজিৎ সজ্জন বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় হেলিকপ্টার এবং হারকিউলিস টারবোপ্রপ পরিবহন উড়োজাহাজের মাধ্যমে সহায়তা কার্যক্রম চালানো হবে।
সম্প্রতি ব্রিটিশ কলম্বিয়ার লিটন গ্রামে দেশটির সর্বকালের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪৯ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়। এরপরই শুরু হয় ভয়াবহ দাবানল। শুধু কানাডা নয় বরং উত্তর আমেরিকা জুড়েই অস্বাভাবিক রকম তীব্র গরম পড়ছে।
কানাডায় দাবানলের আগুন নেভাতে স্থানীয় দমকল কর্মীদের দ্রুত দাবানল অঞ্চলে পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া ব্রিটিশ কলম্বিয়ার প্রায় এক হাজার বাসিন্দা দাবানল থেকে বাঁচতে ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়েছে। নিখোঁজ অনেকের এখনো পর্যন্ত খোঁজ চলছে।
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের অরিগন অঙ্গরাজ্য থেকে কানাডার আর্কটিক অঞ্চল পর্যন্ত প্রচন্ড তাপপ্রবাহের সৃষ্টি হয়। সেটি পূর্ব দিকে সরে যেতে শুরু করেছে। এ দাবদাহের প্রভাবে ব্রিটিশ কলম্বিয়ায় পাহাড় থেকে বরফ গলে বন্যার আশঙ্কা দেখা দিতে পারে বলে স্থানীয় প্রশাসন আশঙ্কা প্রকাশ করছেন।
এদিকে ব্রিটিশ কলম্বিয়া প্রদেশে মোট ৪৮৬ জনের মৃত্যু নথিবদ্ধ করা হয়েছে। সাধারণ সময়ে গড়ে এই মৃত্যুর সংখ্যা থাকে ১৬৫ জনের মতো। স্থানীয় চিফ করোনার লিসা লাপোইন্তে এই মৃত্যুর জন্য কঠিন আবহাওয়াকে দায়ী করেছেন। তিনি বলেছেন, তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে সৃষ্ট দাবদাহ থেকেই মানুষের এই মৃত্যু বলে মনে করা হচ্ছে।