কাস্পিয়ান সাগরের নতুন আতঙ্ক, ভূগর্ভ ফুঁড়ে বেরিয়ে আসছে গনগনে কাদার তাল!
তাল তাল কাদা, গনগনে গরম। আশেপাশে গেলে উত্তাপ সহ্য করতে না পেরে মৃত্যু প্রায় নিশ্চিত। কাস্পিয়ান সাগরের নয়া আতঙ্ক এই কাদার তাল, যার উদগীরণ হয়েই চলেছে Mud Volcano বা কর্দমাক্ত আগ্নেয়গিরি থেকে। মৃত, জীবন্ত আগ্নেয়গিরির কথা তো অনেক শোনা গিয়েছে।
কিন্তু কাদার আগ্নেয়গিরি? এর সম্পর্কে তো ভালোভাবে কিছু জানাই নেই। কাস্পিয়ান সাগর সংলগ্ন এলাকায় গত কয়েকদিন ধরে এই উষ্ণ কাদাস্রোত চিনিয়ে দিচ্ছে Mud Volcanoকে। এর প্রভাবে আজারবাইজানের তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাসের কেন্দ্রগুলি কেঁপে ওঠে এবং বিস্ফোরণও ঘটে।
ঘটনা প্রথম নজরে আসে গত রবিবার। কাস্পিয়ান সাগর (Caspian Sea) থেকে দাউদাউ করে আগুনের লেলিহান শিখা সোজা আকাশপানে উঠে যেতে দেখা যায়। এর উৎস খুঁজতে গিয়েই কাদা আগ্নেয়গিরির কথা জানা যায়।
ভূগর্ভে জল, খনিজ (minerals) ও দাহ্য গ্যাস দীর্ঘদিন ধরে জমে থাকতে থাকতে তৈরি হয় এই জাতীয় আগ্নেয়গিরি। এর জেরে অত্যন্ত চাপ তৈরি হলে মাটি ফুঁড়ে বেরিয়ে আসে শক্তিক্ষয়ের জন্য।
তবে এটা সাধারণ আগ্নেয়গিরির মতো লাভা নয়, এই জাতীয় আগ্নেয়গিরি শুধুমাএ পানিকাদা উদগীরণ করে, যা প্রায় লাভার মতোই শক্তিশালী। এমনকি মিশে থাকে গ্যাসও। এরপর সেই পানিকাদা দাহ্য কোনও পদার্থের সংস্পর্শে এসে অগ্নিশিখায় পরিণত হয়। যেমনটা হয়েছে আজারবাইজানে।
আজারবাইজানের একটি তৈল শোধনাগার কেন্দ্রের কাছে কাস্পিয়ান সাগর থেকে অগ্নিবলয় দেখা যায়। তবে তাতে বিশেষ কোনও ক্ষতি হয়নি তৈল কেন্দ্রের। কোনও প্রাণহানির খবরও পাওয়া যায়নি, এমনটাই জানিয়েছেন সে দেশের জরুরি মন্ত্রকের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী।
কীভাবে তৈরি হয় এই কর্দমাক্ত আগ্নেয়গিরি? এ নিয়ে এখন পর্যন্ত দুটি মতামত আছে। প্রথমত, বিভিন্ন ধরনের দাহ্য গ্যাস প্রচুর পরিমাণে জমে এটা তৈরি হয়। দ্বিতীয় মত, এই গ্যাসগুলি বিভিন্ন ধরনের পাথরের সংস্পর্শে এলে তাপমাত্রা অধিক বৃদ্ধি পায়।
তাতেই ভূগর্ভের উষ্ণতা বাড়ে ও কাদাপানি এভাবে বেরিয়ে আসে। বিশ্বে এ ধরনের আগ্নেয়গিরি রয়েছে প্রায় ৪০০। তবে কোথায় তাদের অবস্থান, সেটা এখনও অনুসন্ধানের বিষয়।