চট্টগ্রামের প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র থেকে এবছর বেশি পরিমাণে মাছের ডিম সংগ্রহের আশা করছেন সেখানকার ডিম সংগ্রহকারীরা। প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র চট্টগ্রামের হালদা নদী। অন্যান্য বছরের তুলনায় সেখান থেকেই প্রচুর পরিমাণে মো মাছের ডিম সংগ্রহ করা করার আশায় বুক বেধেঁছে ডিম সংগ্রহকারীরা।
করোনাভাইরাসের কারণে বর্তমানে বন্ধ রয়েছে সকল শিল্প প্রতিষ্ঠান আর যানবাহন। ফলে দূষণ কমেছে অনেকটা। আর সেই কারণেই সৃষ্টি হয়েছে ডিম ছাড়ার অনুকূল পরিবেশ জানালেন হালদা নদীর গবেষকরা।
অন্যদিকে পরিকল্পিতভাবে ডিম সংগ্রহের জন্য এবছরই সব চেয়ে বেশি প্রথমবারের মতো ৩০০ ডিম সংগ্রহকারীদের তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে বলে জানান হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।
বাংলাদেশের একমাত্র প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র চট্টগ্রামের হালদা নদী। এটি রুই, কাতলা, মৃগেল, কালিবাউস ও কার্প জাতীয় প্রজনন ক্ষেত্র। পরিবেশ অনুকূলে থাকলে বছরের এপ্রিল-জুন মাসের মধ্যে ডিম ছাড়ে মা মাছ। মুষলধারে বৃষ্টি, অমাবস্যা বা পূর্ণিমা পাহাড়ি ঢল, এবং বজ্রপাত ডিম ছাড়ার উপযুক্ত সময়।
হালদা নদী দূষণের প্রধান উৎস হচ্ছে হাটহাজারী একশো মেগাওয়াট পিকিং পাওয়ার প্ল্যান্ট এবং একইসাথে এশিয়ান পেপার মিল। যা দীর্ঘ ধরে বন্ধ পড়ে রয়েছে। হালদা দূষণের এই প্রধান দুই উৎস বন্ধ থাকায় সেখানে কমে এসেছে দূষণ। এছাড়াও করোনা পরিস্থিতির কারণে নদী সংলগ্ন সকল ধরনের কল-কারখানাও বন্ধ রয়েছে।
বন্ধ রয়েছে ড্রেজার দিয়ে মাটি কাটা। সব মিলিয়ে এবছর ডিম ছাড়ার একটি অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। আর সেই কারণে প্রচুর ডিম ছাড়বে বলে আশাবাদী হয়েছেন হালদা নদী গবেষকরা।
পরিকল্পিত উপায়ে পোনা উৎপাদনের জন্য তৈরি করা হয়েছে ৬০টি কুম ও তিনটি হ্যাচারি। আর তাই সঠিক উপায়ে ডিম সংগ্রহ করার জন্যই প্রথম বারের মতো এ বছর তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে ৩০০ ডিম সংগ্রহকারীর।
হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুহুল আমিন জানিয়েছেন, যারা ডিম ক্রয় করবে তাদের প্রত্যেকের জন্য কার্ড দেয়া হবে। অন্যদিকে যারা ডিম সংগ্রহ করবে তাদেরকেও দেয়া হবে সব ধরনের সহায়তা।
জানাগেছে বাংলাদেশের একমাত্র প্রাকৃতিক এই মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র থেকে বেশি ডিম সংগ্রহের আশা নিয়ে সব প্রস্তুতি শেষ করেছেন ডিম সংগ্রহকারীরা। গত বছর প্রাকৃতিক এই মৎস্য প্রজনন থেকে সংগ্রহ করা হয়েছিল ১০ হাজার কেজি মাছের ডিম।