নদীমাতৃক দেশ বাংলাদেশ।আজ বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আজ পালিত হচ্ছে বিশ্ব নদী দিবস।আশির দশকে প্রথম কানাডার ব্রিটিশ কলাম্বিয়া রাজ্যে দিবসটির সূচনা হয়। বাংলাদেশে ২০১০ সাল থেকে পালিত হচ্ছে।বিশ্ব নদী দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশে এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য হচ্ছে- ‘নদী একটি জীবন্ত সত্তা, এর আইনি অধিকার নিশ্চিত করুন।’
নদীবিষয়ক নাগরিক সংগঠন ‘রিভারাইন পিপল’ প্রথম এর সূচনা করেছিল। পরবর্তী সময়ে গঠিত হয় ‘নদী দিবস উদযাপন পরিষদ’। তারা দিবসটির বাংলাদেশ প্রতিপাদ্য নির্ধারণ ও আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করে আসছে।
নদ-নদী প্রকৃতির এক অপার দান; অথচ বিভিন্ন কলকারখানাে তরল বর্জ্য, ময়লা আবর্জনা, মৃত প্রাণী, পশুর চামড়া প্রভৃতি ফেলে প্রতিনিয়ত দূষিত করছি নদী নালা,খাল বিল। তাই সবার উচিত একটু সচেতন হয়ে নদ-নদীগুলো দূষণ থেকে রক্ষা করা; প্রকৃতির অপার দানকে নিজেদের প্রয়োজনে বাঁচিয়ে রাখা।
রাজধানী ঢাকার আশপাশের দখলে-দূষণে মরে যাচ্ছে নদীগুলো। দেখা যাচ্ছে বিভিন্ন এলাকায় অনেক নদীর বুকে শীতকালে হচ্ছে চাষাবাদ। এ ছাড়াও বিভিন্ন অপরিশোধিত বর্জ্য পদার্থ নদীতে ফেলায় পানি মারাত্মক দূষণের শিকার হচ্ছে প্রতিনিয়ত। বুড়িগঙ্গার পানিতে প্রাণীদের অস্তিত্ব বিলীন হয়ে যাচ্ছে। ২০১১ সালে বাংলাদেশ সংবিধানে যে নতুন ধারা সংযোজিত হয়েছে- সেখানে জলাভূমি ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে নদীসহ জলাভূমি রক্ষায় রাষ্ট্রের দায়িত্ব বেড়েছে।সংবিধানের এ ধারা বাস্তবায়িত হলে এ বিষয়ক অনেক সমস্যার সমাধান হবে।
রাজধানীর আশপাশের নদীগুলোর প্রাণপ্রবাহ ফিরিয়ে আনার জন্য, নদীগুলোর রাসায়নিক ও জীববৈচিত্র্যগত মান বজায় রাখার জন্য বর্জ্য নিষ্কাশন ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে অবিলম্বে ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট বসাতে হবে। ট্যানারি এলাকা এবং তেজগাঁও শিল্প এলাকা, গাজীপুরের কোনাবাড়ি এলাকা, একই সঙ্গে ইপিজেড এলাকায় যত কারখানা আছে- সব কারখানায় ইফ্লুয়েন্ট ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট (ইটিপি) বসানোর কাজটি জরুরি ভিত্তিতে সম্পন্ন করতে হবে।
এছাড়াও ঢাকার আশেপাশে যতগুলো নদী আছে সবগুলোর দিকে নজর দিলে দেখা যায় নদীগুলোকে ঘিরে দু’পাশে অসংখ্য শিল্প-কলকারখানা, বিশ্ববিদ্যালয়, বেসরকারি অনেক প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে যার কারনে নদীগুলো আজ বিলীনের পথে। তাই নদনদীগুলোকে এই দখল-দূষণ থেকে রক্ষা করতে হলে সরকারি বেসরকারিভাবে উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।