বাঁধ ভাঙ্গার কথা শুনেছি অনেক আবার দেখেছিও। কিন্তু অসময়ে বাঁধ ভাঙ্গার কথা খুব কমই শোনা যায়। বর্ষার মৌসুম আসার আগেই বাঁধ ভেঙ্গে নষ্ট হচ্ছে ফসলী জমি। নদী গর্ভে তলিয়ে যাচ্ছে অনেক ফসলের ক্ষেত। ঘটনাটি ঘটেছে নীলফামারীর ডিমলা উপজেলায়।
হঠাৎ উজান থেকে নেমে আসা পানির কারণে তিস্তা নদী পানি বৃদ্ধি পেয়ে এই ভাঙ্গনের সৃষ্টি হয়েছে। অসময়ে নদীতে পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে তীব্র স্রোতের ফলে নদীর পাড় ভেঙ্গে নদীতে চলে যাচ্ছে অনেক ফসলি জমি। আর এর ফলে ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
ডিমলা উপজেলার টেপাখড়িবাড়ী ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান জানান যে, মঙ্গলবার ( ৩১ মার্চ ২০২০ ) তারিখ থেকে তিস্তার পানি হঠাৎ বাড়তে থাকে। ২০০০ মিটারের বাঁধটি ভেঙ্গে ফসলের ক্ষেতে পানি ঢোকা শুরু করে। ২০০০ মিটারের এই বাঁধটি তৈরি হয় মূলত চরখড়িবাড়ী গ্রামে স্বেচ্ছাশ্রমে মাধ্যমে। আর নেই বাঁধ ভাঙ্গার ফলেই নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে একের পর এক ফসলী জমি।
স্থানীয় ওই চেয়ারমান ময়নুল হক জানায়, বাঁধভাঙন যদি এই মুহুর্তে রোধ করা না যায় তাহলে আগত বর্ষা মৌসুমে ইউনিয়নের অনন্ত বিশ হাজার মানুষ বন্যার কবলে পরবে একই সাথে হারাতে পারে ঘরবাড়িও।
স্থানীয়দের তথ্যানুযায়ী ২০১৭ সালে স্থানীয়দের স্বেচ্ছাশ্রমের মাধ্যমে নির্মাণ করা হয় বাঁধটি। বন্যার কবল থেকে রক্ষা পওয়ার জন্যই স্থানীয় মানুষ বালুর বস্তা, কাঠ, বাঁশ ও অর্থ দিয়ে নির্মাণ করে বাঁধটি। বাঁধটি নির্মাণ করার সময় তাদের সাথে সহযোহিতার হাতি বাড়িয়ে দেন নীলফামারী-১ আসনের সাংসাদ মুক্তিযোদ্ধা আফতাব উদ্দিন। একই সাথে পাশে এসে দাঁড়ান উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা তবিবুল ইসলাম ঠিকাদার রফিকুল ইসলাম
স্থানীয় মানুষদের জন্য বাঁধের গুরুত্ব উপলব্ধি করে গত বছরে সরকারিভাবে এলজিএসপির বরাদ্দ হয় ৪ লাখ ৭৫ হাজার টাকা। ৪ লাখ ৭৫ হাজার টাকা দিয়ে বাঁধের কিছু অংশ জিও টেক্রটাইল দিয়ে করা হয় স্পার। পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায় যে, অর্থ অভাবের কারণে বাঁধটি সঠিকভাবে প্রয়োজনীয় জিও টেক্রটাইল ব্যবহার এবং সিসি ব্লক বসানো সম্ভব হয়নি।
এ ব্যাপারে ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের বিভাগীয় প্রকৌশলী জানান যে, বাঁধ ভাঙনের বিষয়ে তিনি অবগত আছেন। তিনি জানান, এটি পাউবোর মাধ্যমে নির্মিত কোনো অবকাঠামো নয়। এটি নির্মিত হয়েছে সম্পূর্ণ এলাকাবাসীর স্বেচ্ছাশ্রমে। আর এ কারণে জরুরি ভিত্তিতে পানি উন্নয়ন বোর্ড কোনো ধরনের পদক্ষেপ নিতে অক্ষম। কিন্তু উক্ত বাঁধের ডিজাইন তৈরি করে আগামী রবিবার (৫ এপ্রিল ২০২০ ) তারিখে ঊর্দ্ধতন কতৃপক্ষের কাছে পাঠিয়ে বাঁধটি স্থায়ীভাবে মেরামতের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে বলেন জানান ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের বিভাগীয় প্রকৌশলী হাফিজুল হক।